পুলিশবন্ধু, আলোচিত সংবাদ ডেক্স:
ফরিদপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন হতদরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের ৪৮ জন তরুণ-তরুণী। কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া সোনার হরিণ খ্যাত এই চাকরি পেয়ে খুশিতে আত্মহারা এসব তরুণ-তরুণী। এমন স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিনামূল্যে চাকরি পেয়ে পুলিশ সুপারকে খুশিতে কান্নায় জড়িয়ে ধরেন অনেক অভিভাবক।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ৪৮ জন তরুণ-তরুণী চাকরি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন। এতে ৪১ জন ছেলে ও ৭ জন মেয়ে প্রাথমিকভাবে ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদের জন্য নির্বাচিত হন। পরে রাতেই পুলিশ লাইন্সের ড্রিলশেডে কনস্টেবল পদে ৪৮ জন উত্তীর্ণকে বরণ করে নেয় ফরিদপুর জেলা পুলিশ।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন প্রমূখ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া এক তরুণের বাবা বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। মানুষের কাছে শুনি এখন সরকারি চাকরি নিতে গেলে টাকা লাগে, লোক লাগে। কিন্তু এখন দেখি সব ধারণা ভুল। মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে যে পুলিশে চাকরি হবে কখনো চিন্তাও করি নাই। এতো সুন্দর ও সচ্ছভাবে পুলিশের চাকরি পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য পুলিশ সুপার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
এসকল ব্যাপারে জানতে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘স্মার্ট পুলিশ গঠন করার জন্য আমরা যোগ্য প্রার্থীদেরকে বাছাই করেছি। আর এই কার্যক্রম চালু হয়েছিল গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে। নিয়োগ বোর্ডের যেসকল সদস্য ছিল সবাই একদম স্বচ্ছ ছিল। যারা চান্স পেয়েছে সবাই যোগ্য প্রার্থী। মাত্র ১২০ টাকায় নিয়োগ পেয়েছে। কোন প্রকার সুপারিশ ও লেনদেনের সুযোগ ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য ২১’শ ৬২ জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছিল। তবে এদের মধ্যে থেকে ১৭’শ ২৮ জন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে লিখিত পরীক্ষায় বাছাই হয়েছিল ৪’শ ৭২ জন। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে ১৮৯ জন থেকে মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলে ৪৮ জনকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছি। এদের মধ্যে পুরুষ ৪১ ও নারী ৭ জন।’
এসপি মোর্শেদ আলম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা সম্পূর্ণ তদবিরবিহীন, প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত। তাইতো উত্তীর্ণ সকলে আগামী দিনে ‘সেবার ব্রতে চাকরি’ এই মহান ব্রতে উজ্জীবিত হয়ে, সততা দেশপ্রেম এবং কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখবেন বলে বিশ্বাস করি।’