এমপি সার্কেল, আলোচিত সংবাদ ডেক্স:
টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে বহুল আলোচিত সিদ্দিকী ও খান পরিবার দীর্ঘ ৩৩ বছর পর এক মঞ্চে এসেছে। দুই পরিবারের দুই প্রতিনিধি এক মঞ্চে বসে পরস্পরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। অতীতের দূরত্ব ঘুচিয়ে আগামীতে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, আরেকজন আমানুর রহমান খান রানা। দু’জনই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) এবং আমানুর রহমান খান রানা টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে জয় পান।
স্বাধীনতার পর টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আবর্তিত হয় সিদ্দিকী ও খান পরিবারকে কেন্দ্র করে। সিদ্দিকী পরিবারের পুরোভাগে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। খান পরিবারের নেতৃত্ব দিতেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত শামসুর রহমান খান শাহজাহান।
এ দুই পরিবারে ছিল ব্যাপক সখ্য। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তারা মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু নব্বই দশকের পর জেলা আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব নিয়ে দুই পরিবারের সম্পর্কে চিড় ধরে। ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিঁড়ে যায়। শুরু হয় প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব-বিবাদ। দুই পরিবারের অবস্থান হয় দুই মেরুতে। এভাবেই পার হয়েছে দীর্ঘ ৩৩ বছর।
শামসুর রহমান খান শাহজাহান মারা যাওয়ার পর খান পরিবারের হাল ধরেন তাঁর ভাতিজা আমানুর রহমান খান রানা। তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি। এ ক্ষেত্রে তিনি বাড়তি সুবিধা পান দল থেকে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও কাদের সিদ্দিকীর বহিষ্কারের পর। পরে অবশ্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব কমেছে।
সেই সঙ্গে দূরত্ব ঘুচেছে সিদ্দিকী ও খান পরিবারের। গত শনিবার সিদ্দিখালী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে শামসুর রহমান খান শাহজাহান স্মৃতি ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে এই দুই পরিবারের প্রতিনিধিরা এসেছেন। আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এ সময় আমানুর রহমান খান রানার চাচা শামসুর রহমান খান শাহজাহানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি শিক্ষাবৃত্তির ব্যয় নির্বাহের ঘোষণা ও আমানুর রহমান খান রানাসহ তাঁর ভাই মুক্তির উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের বুকে ধারণ করতে আমার একটুও যন্ত্রণা নেই। কিন্তু সত্য ও কল্যাণের পথে থাকতে হবে।’
এর জবাবে আমানুর রহমান খান রানা বলেন, ‘চাচা (লতিফ সিদ্দিকী) আপনি আমাদের অভিভাবক। টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সৃষ্ট সংকট নিরসনে আপনাকে দায়িত্ব নিয়েই কাজ করতে হবে। আমি ও আমার পরিবার আপনার সঙ্গে থাকব। আপনি যা বলবেন, তা আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।
মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঘাটাইলের ইউএনও ইরতিজা হাসান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালাম মিয়া, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কল্পনা রানী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক।