পুলিশবন্ধু, আলোচিত সংবাদ ডেক্স:
দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ এর দিক নির্দেশনায় ঘোড়াঘাটে লাশ উদ্ধারের ৬ ঘণ্টার মধ্যে ফেরদৌসি বেগম (২২) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বেলা ১২টায় ঘোড়াঘাট থানায় এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান দিনাজপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আব্দুল্লাহ আল মাসুম। এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় ঘোড়াঘাট উপজেলার কৃষ্ণপুর মরিচা গ্রামের মাঠে ধান ক্ষেতের আইল থেকে একই এলাকার গৃহবধূ ফেরদৌসি বেগম (২২) এর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিং এ তিনি জানান, জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি টিএন্ডটি পাড়া এলাকার ফিরোজ আহমেদের মেয়ে ফেরদৌসি বেগমের সাথে অনুমান ৪ বছর আগে ঘোড়াঘাট উপজেলার কৃষ্ণপুর মরিচা গ্রামের নওশা মিয়ার ছেলে সাগর আহমেদের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পর থেকেই তাদের কোনো সন্তান না হওয়াকে কেন্দ্র করে মনোমালিন্য চলে আসতেছিল। এমতাবস্থায় ঘটনার ১ মাস পূর্বে তাদের পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে আসামী তার স্ত্রীকে শারীরিক ভাবে নির্বাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ঘটনার ১০/১৫ দিন পর তার স্ত্রীকে আনার জন্য গেলে আনার জন্য গেলে তার নানা শ্বশুর তাকে মারপিট করে। এতে তার স্ত্রী বাধা প্রদান না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন গরুর ঘাস কাটার জন্য তার স্ত্রীকে ধানের মাঠে পাঠানোর পরে তিনি মাঠে গিয়ে লাইলনের রশি দিয়ে তার স্ত্রীর সামনে ২ হাত বেঁধে একই রশি দিয়ে গলায় পেচ দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর মাঠের ভিতর প্রবাহিত খাড়িতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রশি ফেলে বাড়িতে চলে যায়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে আসামী হাঁস বিক্রি করতে বাজারে যায়। পরে বাড়িতে এসে লোকমুখে তার স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে অজ্ঞানের ভান করে।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ঘোড়াঘাট- হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও পিবিআই টিম সহ ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে আসামী সাগর সহ তার মা, ভাই ও ভাবিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামী সাগর প্রাথমিক ভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের নানা সমসের আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের এলাকা থেকে ঘাস কাটার ১টি কাচি ও প্লাস্টিকের বস্তা জব্দ করে আসামীকে গ্রেপ্তারপূর্বক স্বেচ্ছায় মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয় বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদানের জন্য প্রেরণ করেন।
এ সময় প্রেস ব্রিফিংকালে ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম, ঘোড়াঘাট থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই আজিজার রহমান, উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।