1. policebondhu@gmail.com : Jasemuddin Ruman : Jasemuddin Ruman
  2. jasemruman@gmail.com : policebondhu :
  3. propertypokkho@gmail.com : Jasem Ruman : Jasem Ruman
সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি :
'পুলিশবন্ধু ডট কম' সংশ্লিষ্ট সকলের সতর্কতার জন্য জানানো যাচ্ছে যে, 'পুলিশবন্ধু ডট কম' এর 'সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা' জনাব মোঃ জসীমউদদীন (রুমান) এর ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্ট এবং বিকাশ/নগদ/রকেট/উপায় এর '০১৭১২ ৩৯২৫৭০(পার্সোনাল)' একাউন্ট ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে 'পুলিশবন্ধু ডট কম' এর পক্ষে কোন ধরণের আর্থিক লেনদেন পরিচালিত হয়না। অতএব, অন্যকোন মাধ্যমে 'পুলিশবন্ধু ডট কম' বিষয়ক আর্থিক লেনদেন না করার জন্য সবাইকে সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা হচ্ছে। সতর্কতায়:- 'পুলিশবন্ধু ডট কম' কর্তৃপক্ষ।

বিডিবিএল থেকে চার ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে ১০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান

  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩

পুলিশবন্ধু, অনুসন্ধান ও কেস স্টাডি ডেক্স:
অটো রাইস মিল স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড-বিডিবিএলের রাজশাহী শাখা থেকে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন গাজী খোরশেদ জাহান। মিলের যন্ত্রপাতি কেনার জন্য এই ঋণ অনুমোদন করা হয়। কিন্তু যন্ত্রপাতি না কিনেই ভুয়া বিল দাখিল করে টাকা তুলে নেন তিনি। প্রস্তাবিত প্রকল্পে শুধু কয়েকটি পিলার বসানো হয়। এরপর প্রকল্পটি আর হয়নি। ওই ঋণের টাকা দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছেন গাজী খোরশেদ জাহান।

শুধু তাই-ই নয়, অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানকেও কোটি টাকার ওপরে ঋণ দিয়েছে ব্যাংকটি। এভাবে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের চারটি প্রতিষ্ঠান ওই ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ২৯ লাখ ঋণ নিয়ে আর ফেরত দেয়নি। বাংলাদেশ কম্পোট্রলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের অডিট প্রতিবেদনে ব্যাংকটির এমন আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়েছে। বিডিবিএলের রাজশাহী শাখার ২০১০-২০১১ হতে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের শিল্প ঋণ বিতরণ ও আদায় সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের ওপর এ অডিট করা হয়। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দাবি, ঋণের টাকা আদায়ে মামলা চলছে।

২০২১ সালে ১৯ অক্টোবর জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্ট বিভাগে অডিট প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এতে দেখা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গাজী অটো রাইস মিল স্থাপনের জন্য ঋণের আবেদন করেন গাজী খোরশেদ জাহান নামে এক ব্যক্তি। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ২৬ জুলাই মেসার্স গাজী রাইস মিল ও মেসার্স কসিম উদ্দিন এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে আড়াই কোটি টাকা চলতি মূলধন ঋণ দেয় ব্যাংকটির রাজশাহী শাখা। একই বছরের ১৮ ডিসেম্বর মেসার্স গাজী রাইস মিলের অনুকূলে ৭৫ লাখ টাকা মেয়াদি ঋণ মঞ্জুর করা হয়। চলতি মূলধন ঋণটি ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ এবং ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে বিএল (ব্যাড/লস) শ্রেণিকৃত দেখানো হয়েছে। আর প্রতিষ্ঠানে অনুকূলে দেওয়া মেয়াদি ঋণটিও ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদোত্তীর্ণ হয় এবং ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিএল মানে শ্রেণিকৃত দেখানো হয়। এ ঋণের মঞ্জুরিপত্রের ৮ নম্বর শর্ত মোতাবেক ঋণের টাকা দিয়ে স্থানীয় যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। কিন্তু গ্রহীতা যন্ত্রপাতি না কিনেই ভুয়া বিল দাখিল করে ঋণের টাকা উত্তোলন করেন। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও সরেজমিন নিশ্চিত না হয়েই ঋণ দেন। তবে অডিট টিম ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে ওই প্রকল্পে কয়েকটি পিলার ছাড়া কোনো যন্ত্রপাতি পায়নি। ওই প্রকল্পে আগের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিও বিক্রি করে দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুদাসলে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়ায় ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। কিন্তু নীতিমালা লঙ্ঘন করে ব্যাংক কর্মকর্তারা সুদ মওকুফসহ দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা দিয়েছেন। এ ধরনের গুরুতর আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সমুদয় টাকা আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে অডিট প্রতিবেদনে।

অডিটে আরও ধরা পড়েছে, ব্যাংকের রাজশাহী শাখা হতে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ায় ১ কোটি ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আদায় করা যায়নি। ‘মেসার্স ন্যাশনাল প্লাস্টিক’-এর নামে ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর ৪৫ লাখ টাকা মূলধন ঋণ মঞ্জরি করা হয়। কিন্তু মঞ্জুরি শর্ত মোতাবেক ঋণের দায় মেয়াদসীমার (এক বছর) মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে নতুন ঋণ হিসাব খুলে ২০১৪ সালের ৩০ জুন চলতি মূলধন ঋণের লিমিট অতিরিক্ত ১০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে কোনো টাকা আদায় না করার পরও ঋণটি নবায়ন করা হয়। ঋণের কাগজপত্র পর্যালোচনায় অডিট টিম দেখতে পায়, ন্যাশনাল প্লাস্টিকের নামে ঋণ গ্রহীতার ঠিকানায় বারবার চিঠি দেওয়া হলেও তা ফেরত আসে। ওই প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব নেই। গ্রাহকও প্রকৃত ব্যবসায়ী নন। প্রকৃতপক্ষে তার হাসকিং মিল ছিল। সেটিও আগে থেকেই ঋণগ্রস্ত। প্লাস্টিক কারখানা পরিচালনার কোনো অভিজ্ঞতা না থাকার পরও তাকে ঋণ দেওয়া হয়। ঋণের টাকা উত্তোলনের পর থেকে ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন ও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। ঋণের টাকা আদায় হওয়ার নিশ্চয়তা না থাকার পরও অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ বছরের জন্য বিশেষ পুনঃতফশিল করে সময়ক্ষেপণের সুবিধা দেওয়া হয়। ঋণ অপেক্ষা জামানতের পারিমাণও নগণ্য। তবে এই অডিট আপত্তির জবাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৩ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রপ্তানিযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের দর পতন হওয়ায় গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ কারণে ঋণটি শ্রেণিকৃত করা হয়। তবে ব্যাংকের এ জবাব গ্রহণ করেনি অডিট কর্তৃপক্ষ।

এ দুই প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায় না হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড-বিডিবিএলের রাজশাহী শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক ইমাম হোসেন বলেন, অর্থঋণ আদালতে মামলা করা হয়েছিল। আমরা রায় পেয়েছি। এখন জারি মামলা চলছে। আশা করছি পাওনা টাকা আদায় হবে।

শিল্প ঋণ প্রদানে গুরুতর অনিয়ম হয়েছে ব্যাংকটি বগুড়া শাখাতেও। মেসার্স সরকার ব্রাদার্স ফ্লাওয়ার অ্যান্ড অয়েল মিলস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূলধন ঋণ মঞ্জুরি প্রদান করা হয়। ঋণ মঞ্জুরির সময় গ্রাহকের সহজামানত ছিল ৪ কোটি টাকা মূল্যমানের ২ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি। পরবর্তীতে ওই জমি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৩ কোটি টাকা মূল্যায়ন করে। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মৌজারেট অনুযায়ী ওই জমির মূল্য মাত্র ১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্ত মোতাবেক অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা মূল্যের সহজামানত বন্ধকের পরিবর্তে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের এফডিআর লিয়েন রেখে ওই ঋণ মঞ্জুর করা হয়। এই ঋণও আদায় করতে পারেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ফলে ২০২০ সালের ১ অক্টোবর পর্যন্ত সুদাসলে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়ায় ২ কোটি ২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। তবে টাকা আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ব্যাংকটির বগুড়া শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবদুর রাজ্জাক জানান, টাকা আদায়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

এ ছাড়া সহজামানত অতিমূল্যায়ন ও মঞ্জুরিপত্রের শর্ত ভঙ্গ করার পরও মামলা না করায় ২ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা আদায় করতে পারেনি ব্যাংকের রংপুর শাখা। সোমা অ্যান্ড সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেডকে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা প্রকল্প মেয়াদি ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ঋণের বিপরীতে দেওয়া জমির মূল্য মৌজারেটের প্রায় ১১.৩৩ গুণ বেশি দেখানো হয়। পরবর্তীতে ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো টাকাই আদায় করতে পারেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র ৯৮ হাজার টাকা আদায় হয়। খেলাপি হলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলাও করেনি। গ্রাহকের বিনিয়োগ নিশ্চিত না হয়েই কয়েক কিস্তিতে ঋণের টাকা ছাড় করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ফলে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। সুদ ছাড়াই এখন ব্যাকের পাওনা ২ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে বিডিবিএলের রংপুর শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান বলেন, অর্থঋণ আদালতে মামলা চলমান।

অনুগ্রহ করে এই সংবাদটি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও খবর

© একটি নাগরিক ইনস্টিটিউট প্রচেষ্টা এবং মোঃ জসীমউদদীন (রুমান) কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Site Customized By NewsTech.Com