1. policebondhu@gmail.com : Jasemuddin Ruman : Jasemuddin Ruman
  2. jasemruman@gmail.com : policebondhu :
  3. propertypokkho@gmail.com : Jasem Ruman : Jasem Ruman
সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি :
'পুলিশবন্ধু ডট কম' সংশ্লিষ্ট সকলের সতর্কতার জন্য জানানো যাচ্ছে যে, 'পুলিশবন্ধু ডট কম' এর 'সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা' জনাব মোঃ জসীমউদদীন (রুমান) এর ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্ট এবং বিকাশ/নগদ/রকেট/উপায় এর '০১৭১২ ৩৯২৫৭০(পার্সোনাল)' একাউন্ট ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে 'পুলিশবন্ধু ডট কম' এর পক্ষে কোন ধরণের আর্থিক লেনদেন পরিচালিত হয়না। অতএব, অন্যকোন মাধ্যমে 'পুলিশবন্ধু ডট কম' বিষয়ক আর্থিক লেনদেন না করার জন্য সবাইকে সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা হচ্ছে। সতর্কতায়:- 'পুলিশবন্ধু ডট কম' কর্তৃপক্ষ।

বুয়েট ছাত্র ফারদিন হত্যাকান্ড: রায়হান গ্যাংয়ের ৮-১০ জন জড়িত

  • প্রকাশকাল : বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২

পুলিশবন্ধু, আলোচিত সংবাদ ডেক্সঃ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যার সঠিক কারণ জানা না গেলেও খুলতে শুরু করেছে জট। নেপথ্যে উঠে এসেছে রায়হান ওরফে হেরোন্সি রায়হান ওরফে হিরো রায়হান ওরফে গ্যাংস্টার রায়হানের নাম। চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৪ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা তিনি। ঘটনার দিন রাতে ফারদিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি অংশ নেন রায়হানের নেতৃত্বে আরও ৮-১০ জন। যারা সবাই চিহ্নিত মাদক কারবারি। মূলত র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত সিটি শাহীনের ছত্রছায়ায় রায়হান সব অপকর্ম চালাতেন।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) গোয়েন্দা সূত্র এ তথ্য জানায়।

জানা যায়, রাশেদুল ইসলাম ওরফে সিটি শাহীনের সঙ্গে রায়হানের ঘনিষ্ঠতা ছিল। সিটি শাহীন নিহত হওয়ার পরে এলাকা ছাড়ে রায়হান গ্যাং। ঘটনার পর চনপাড়ার ৪ নম্বর ব্লকে রায়হানের বাসায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। নির্মাণাধীন তিনতলা বাসাটি ছিল তালাবদ্ধ। রায়হানের পরিবারের লোকজন কোথায় গেছেন, এ বিষয়ে স্থানীয়দের কাছেও পাওয়া যায়নি কোনো তথ্য।
তবে স্থানীয়রা জানান, চনপাড়ার চিহ্নিত মাদক কারবারি ও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। বিশেষ করে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সিটি শাহীন নিহত হওয়ার পর কেউ কেউ পুরো পরিবার নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন। চনপাড়ার দেড় শতাধিক দোকানের বন্ধ রয়েছে অধিকাংশই।

রায়হানের গ্যাংস্টার গ্রুপের কয়েকজন নজরদারিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোনো বিষয় নিয়ে ফারদিনকে ফাঁদে ফেলে ‘ফিটিং দিয়ে’ জিম্মি করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চনপাড়া বস্তিতে জোর করে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এরপর তাকে হত্যার পর শীতলক্ষ্যা নদীতে মরদেহ ফেলে গুম করার চেষ্টা করা হয়।

ফারদিন হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই ছায়া তদন্ত করছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, রায়হান গ্যাংয়ের সদস্য টাক রবিন, মিঠুন ওরফে মিঠু, পিচ্চি শাহ আলম, ডাকাত মোস্তফার ভাগিনা মোবারক, উজ্জ্বল ও মাল্টা রবিনসহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলানো হচ্ছে। রায়হানসহ অন্যদের গ্রেফতার করা গেলে ফারদিন হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উন্মোচিত হবে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চনপাড়াকেন্দ্রিক গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা নানা কৌশলে ফাঁদে ফেলেন অনেককে। কেউ আবার তাদের তৈরি করা ফাঁদে পা দেন। ওই রাতে চনপাড়ায় ফারদিনকে কোনো ফাঁদে ফেলা হয়েছিল কি না, তা আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এত রাতে চনপাড়া এলাকায় তার উপস্থিতি বের করার চেষ্টা চলছে।

চনপাড়ার স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চনপাড়া বস্তিতে ‘রায়হানের শেল্টারদাতা’ হিসেবে কাজ করছেন কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মো. বজলুর রহমান ও মনু ওরফে খালা মনুসহ একাধিক মাদক কারবারি। বজলুর রহমান ও মনুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল বন্দুকযুদ্ধে নিহত সিটি শাহীনের।

জানতে চাইলে র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ফারদিনকে হত্যার রহস্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনার ছায়া তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে র‍্যাব। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি, এলাকার মানুষের সঙ্গেও কথা বলেছি।

ফারদিন হত্যাকাণ্ডের মোটিভের বিষয়ে তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ফারদিন হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন ফুটপ্রিন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চনপাড়ার আশপাশে ফারদিনকে হত্যা করা হয়। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে রায়হান গ্যাং। রায়হান গ্যাংয়ের অপরাধের ধরন ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

ফারদিন কেন সেখানে গিয়েছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফারদিন একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কেন সেখানে গিয়েছিলেন এবং তাকে কেন হত্যা করা হলো সেই মোটিভ উন্মোচনে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা দলসহ র‍্যাবের একাধিক টিম কাজ করছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, চনপাড়া থেকে ফারদিনের গ্রামের বাড়ি খুব বেশি দূরে নয়। যাদের শনাক্ত করা হয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আনতে পারলে হত্যাকাণ্ডের কারণ ও মোটিভ জানা যাবে।

কায়েতপাড়া ও চনপাড়া এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বজলুর বাবা এক সময় বস্তির গুদারাঘাট এলাকায় নৌকা চালাতেন। ১০ বছর আগেও একটি চালের দোকানের মালিক ছিলেন বজলু। এর আগে ছিঁচকে চোর থেকে বাসের হেলপারিও করেছেন। চনপাড়া বস্তির পুরো মাদকের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন বজলু। কয়েকশ মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনি প্রতি মাসে মাসোহারা পান কোটি টাকা।

এছাড়া প্লট দখল, জিম্মি করে টাকা উদ্ধার, পানির ব্যবসা, ঠিকাদারি, চাঁদাবাজি, নৌকার ঘাট আর বাজার নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে সব কাজের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। বজলুর বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে একাধিক।

জানা যায়, মূলত চনপাড়ায় মাদক বিক্রি হয় কয়েকটি স্তরে। প্রতিটি সিন্ডিকেটের একটি বা দুটি করে ওয়াচ পার্টি থাকে। এদের কাজ পোশাকে বা সাদা পোশাকের পুলিশ-র‌্যাব দেখলে সতর্ক করে দেওয়া। এক গ্রুপ শুধু খুচরা বিক্রি করে, যারা এক স্থানে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। আর বড় পাইকারি চালান নিয়ন্ত্রণ করে খোদ সিন্ডিকেটের প্রধানরা।

ওই সূত্রের দেওয়া তথ্যমতে, কোনো কোনো সিন্ডিকেটের কয়েকশ নারী সদস্য রয়েছেন যারা সরাসরি টেকনাফ থেকে কনডমের মধ্যে ইয়াবার চালান গোপনাঙ্গে করে নিয়ে আসেন চনপাড়ায়।

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ গত ৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওইদিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের দুদিন পর গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।

এরপরই তার দুই বন্ধু বুশরা ও শীর্ষ সংশপ্তককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপর গত বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রামপুরার বাসা থেকে বুশরাকে গ্রেফতার করা হয়। ওইদিনই ফারদিন হত্যা মামলায় তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। বুশরা রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত বুধবার (৯ নভেম্বর) দিনগত রাতে ফারদিনের বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা সাংবাদিক নূর উদ্দিন রানা।

ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের পরদিন গত ৮ নভেম্বর ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ বলেছিলেন, ময়নাতদন্তে আমরা দেখতে পেয়েছি, ফারদিনের মাথায় এবং বুকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে সেই আঘাত কোনো ধারালো অস্ত্রের নয়। আঘাতের চিহ্ন দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশের চাহিদা ও অধিকতর তথ্যের জন্য তথ্য-উপাত্ত ও আলামত মহাখালী ভিসিআরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পেলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে ফারদিনকে কীভাবে খুন করা হয়েছে।

অনুগ্রহ করে এই সংবাদটি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও খবর

© একটি 'নাগরিক সিন্ডিকেট' প্রচেষ্টা এবং মোঃ জসীমউদদীন (রুমান) কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Site Customized By NewsTech.Com