পুলিশবন্ধু আলোচিত সংবাদ ডেক্স:
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের উপস্থিতি ক্রমশই বাড়ছে। কিন্তু একে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছেন না ইসি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। অভিযোগ রয়েছে, ইসি সচিব জাহাংগীর আলমসহ নির্বাচন পরিচালনা কাজের সংশ্লিষ্ট ডেস্কের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের দেখলেই আতংকিত হয়ে পড়ছেন।
নির্বাচন ভবনে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন আরএফইডি’র (রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি) নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, অহেতুক আতঙ্কের কারণে সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রয়াশই দূর্ব্যবহার করছেন। এনিয়ে একাধিকবার তারা কমিশন সদস্যদের বৈঠক করেছেন। কিন্তু কোন সমাধান হচ্ছে না।
তবে বৃহস্পতিবার রাতে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম সমকালের সঙ্গে আলাপকালে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘কমিশন সদস্যদের কক্ষের সামনে একাধিক চ্যানেলের ক্যামেরা তাক করে রাখা হয়। এতে কমিশন সদস্যরা অস্বস্তি বোধ করেন। এ বিষয়টি আরএফইডির নেতাদের এবং সংশ্লিষ্ট টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধিদের বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।’
আরএফইডির সভাপতি সাইদুর রহমান অবশ্য দাবি করেছেন, চ্যানেলগুলোর ক্যামেরাম্যানরা বেশিরভাগ সময়েই মিডিয়া সেন্টারে অবস্থান করেন। নির্ধারিত সভা বা কমিশনের কোন সদস্য না ডাকলে উপরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে না। ইসি সচিবের দুর্ব্যবহারের বিষয়ে একাধিক সদস্যসহ নির্বাচন ভবনে কাজ করেত যাওয়া সাংবাদিকরা তাঁকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। কারণ সামনেই জাতীয় নির্বাচন। এমন সময় ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের অসহিষ্ণু আচরণ কোনভাবেই কাম্য নয়। ইসি সচিবের এমন আচরণ স্বাধীন সাংবাদিকতার বাধা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আরএফইডির সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেনের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ইসির একটি পূর্ব নির্ধারিত সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের কক্ষে উপস্থিত সাংবাদকিরা প্রবেশ করেন। সিইসি তখন জানান, ইসি সচিব কথা বলবেন। কিন্তু ইসি সচিব কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
তিনি বলেন, এর আগে সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন নির্বাচন কমিশন সচিব। বৈঠকের শুরুতে টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যানরা ফুটেজ সংগ্রহ করতে গেলে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েন তারা।
এই অভিযোগের বিষয়ে জাহাংগীর আলম সমকালকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে অভদ্র আচরণের অভিযোগ সত্য নয়।’ তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাই বলেননি, সেখানে দূর্ব্যবহার কীভাবে হবে। সিইসির বলার পরেও ব্রিফিং না করার বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, এটা তাঁর ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে বিষয় ছিল।
সাংবাদিকদের চিঠির মাধ্যমে সময় বেধে দিয়ে সোর্স প্রকাশের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে ইসি সচিবালয়ের বিরুদ্ধে। যদিও উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে সাংবাদিক কারো কাছে সোর্স প্রকাশ করতে বাধ্য নয়। এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, এটা অবশ্য কমিশনের সঙ্গে আলাপ করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিঠির ভাষা কি ব্যবহার করা হয়েছে তা তিনি অবহিত নন।
সাংবাদিকরা কোন কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ডেকে নিয়ে শাসানোর অভিযোগও অস্বীকার করেন ইস সচিব। তিনি বলেন, সংবাদ যেখানে সাংবাদিক সেখানে যাবেই। সেটা আটকানোর এখতিয়ার কারো নেই।