পুলিশবন্ধু, আলোচিত সংবাদ চক্র ডেক্স:
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা সপ্তম দফার টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে।
রোববার (২৬ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে এই অবরোধ চলবে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত। অবরোধে নেতা-কর্মীদের ‘দুর্জয় সাহস’ নিয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি এ আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, ‘রোববার থেকে শুরু হওয়া অবরোধে বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মাঠে নামতে হবে। এ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই আন্দোলনকে আরও বিস্তৃত, বেগবান ও তেজোদীপ্ত করতে হবে। মনে রাখবেন, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিও আর বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন দেখতে চায় না, এদের পতন হবেই।’
তিনি বলেন, ‘জোড়াতালি দিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটছে মাফিয়াচক্র। তবে তুমুল আন্দোলনে-জনজোয়ারে এই নির্বাচনী নাটক ভন্ডুল হয়ে যাবে। জনগণ আগামী ৭ জানুয়ারি দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন দিবস উদ্যাপিত করবে।’
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে এখন হাসি-তামাশা, বাণিজ্য ও প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। জনগণের কাছ থেকে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। সংসদ সদস্য বানানোর প্রলোভনে কিংস পার্টি-ভুঁইফোড় পার্টিতে রাজনৈতিক নেতাদের ঢোকানো হচ্ছে। কোনো নীতিবান, আদর্শবাদী, দেশপ্রেমী রাজনীতিককে তারা নির্বাচনে নিতে পারছে না। কতিপয় ডিগবাজি মার্কা-ভ্রষ্টচারী রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নির্বাচনী রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা বানাতে কবজা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ বিরোধী দলের নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীসহ আন্দোলনে সক্রিয় ও সাহসী নেতাদের টার্গেট করে কারাদণ্ড দিচ্ছে। নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে দুই বছরের নিচে কারো সাজা হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, হত্যা, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ২৯ অক্টোবর হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি-জামায়াত ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা।
তারপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় এবং ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করে সরকারবিরোধী দলগুলো। পরে ১১ ও ১২ নভেম্বর চতুর্থ দফা এবং ১৫ ও ১৭ নভেম্বর পঞ্চম দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকা দেয় তারা। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তা প্রত্যাখান করে ১৯ ও ২০ নভেম্বর সারাদেশে হরতাল পালন করে সরকারবিরোধী দলগুলো। এরপর ২২ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে ষষ্ঠ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ পালন করে দলটি। গত ২৪ নভেম্বর ভোর ৬টায় শেষ হয় ওই অবরোধ কর্মসূচি।