পুলিশবন্ধু, আনন্দ-বিনোদন ও বিশেষ প্রতিবেদন ডেক্স:
বাংলা ভাষার প্রথম টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। যার যাত্রা হয়েছিল ১৯৬৪ সালে। সেই নিরিখে ২৫ ডিসেম্বর ৫৯ বছর পেরিয়ে ৬০-এ প্রবেশ করল রাষ্ট্রায়াত্ত্ব এই চ্যানেলটি।
চ্যানেল আই প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর বিটিভি’র জন্মদিনে নিজস্ব আঙিনায় আয়োজন করে বিশেষ অনুষ্ঠানের। যেহেতু বিটিভির মাধ্যমেই বাংলা ভাষার শিল্পমনা মানুষ তৈরি হয়েছে। পরবর্তীকালে এই বিটিভি’র একাধিক অভিজ্ঞ ব্যক্তির মাধ্যমেই দেশের স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর নেতৃত্বের পদগুলো তৈরি হয়। সেদিক হিসেব করলে এদেশের স্যাটেলাইট চ্যানেলের প্রায় শতভাগ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বিটিভিতে কাজ করা কর্তা ব্যক্তির নেতৃত্বেই।
চ্যানেল আই যেন বিটিভি’র জন্মদিন পালন করে নিজেদের সেই দায় পূরণ করার চেষ্টা করে। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। চ্যানেল আই-এর ‘মুস্তাফা মনোয়ার স্টুডিও’ সাজানো হয়েছিল বিটিভি’র জন্মদিনকে ঘিরে। এ মিলনমেলায় উপস্থিত হয়েছিলেন বিটিভি’র সাবেক কর্মকর্তা, কলাকুশলী ও শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে ছিলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর ও এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।
বিটিভি’র শুরু থেকে বর্তমান সময়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা। ছিল সংগীত পরিবেশনা। অতিথি আপ্যায়নে ছিল পিঠা-পুলির আয়োজন। এই অনুষ্ঠানের আইডিয়া ফরিদুর রেজা সাগরের।
তিনি বলেন,‘আমরা তো সবাই মিলে একটি সাংস্কৃতিক পরিবার। আমাদের শিল্প-সাহিত্যের আঁতুড়ঘর কিন্তু বিটিভি। কেউ কেউ বিটিভিকে অবজ্ঞার চোখে বর্ণনা করতে চান। কিন্তু আজকে যে আধুনিকতায় আমরা নিজেদের বিস্তৃত করছি তার মূল শেকড়টা কোত্থেকে এসেছে? অবশ্যই তা বিটিভি। সেই সম্পর্কের জায়গা থেকেই বিটিভি’র জন্মবার্ষিকীকে আমরা ট্রিবিউট দিয়ে আসছি। ধরুন কোনো বরেণ্য মানুষের জন্মদিনে তো আমরা অনেকেই বিশাল আয়োজন করে থাকি। সে হিসেব করলে তো এমন একটি প্রতিষ্ঠানের জন্মদিনকে সেলিব্রেট করাটা নিজেদেরও একটা সাংস্কৃতিক দায়িত্বের ভেতরে পড়ে। আমার নিজের অগণিত স্মৃতি বিটিভিকে ঘিরে। আমার লেখা একাধিক বই বিটিভি’র স্মৃতিকে কেন্দ্র করে। এরকম আমাদের অনেকের জীবন বিটিভিকে অস্বীকার করে কেউ প্রকাশ করতে পারবে না। সেই শ্রদ্ধায় আমরা বিটিভি’র জন্মদিনের সকালটা একসাথে মিলিত হয়ে চেষ্টা করি, নিজেদের স্মৃতির জাল বোনার।’
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। আফজাল হোসেনের শিল্পীজীবনের জন্মটাও বিটিভিকে ঘিরেই। গতকালের সকালের অনুষ্ঠানে আফজাল হোসেনের সাবলীল উপস্থাপনায় গান পরিবেশনার ফাঁকে ফাঁকে আগত অতিথিদের নিয়ে যখন স্মৃতিচারণ হচ্ছিল তখন অনেকেই নস্টালজিক হয়ে ওঠেন। কারণ তাদের হাতেই একসময় বিটিভির অনেক নতুন কিছু প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কেউ অভিনয়ে, কেউ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কেউবা ক্যামেরার নেপথ্যের কারিগর হিসেবে। সকলের নাম নিবন্ধনের পর জানা গেল ১০০ জন বিটিভি’র ৬০ বছরের বিভিন্ন সময়ের সাথে সম্পর্কিত মানুষেরা সকালে উপস্থিত হয়েছিলেন চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সকাল ৭.৩০ মিনিট থেকে শুরু হয়ে অনুষ্ঠানটি চলে ৯.৩০ পর্যন্ত। চ্যানেল আই পুরো অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে।