1. policebondhu@gmail.com : Jasemuddin Ruman : Jasemuddin Ruman
  2. jasemruman@gmail.com : policebondhu :
  3. propertypokkho@gmail.com : Jasem Ruman : Jasem Ruman
সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি :
'পুলিশবন্ধু ডট কম' সংশ্লিষ্ট সকলের সতর্কতার জন্য জানানো যাচ্ছে যে, 'পুলিশবন্ধু ডট কম' এর 'সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা' জনাব মোঃ জসীমউদদীন (রুমান) এর ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্ট এবং বিকাশ/নগদ/রকেট/উপায় এর '০১৭১২ ৩৯২৫৭০(পার্সোনাল)' একাউন্ট ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে 'পুলিশবন্ধু ডট কম' এর পক্ষে কোন ধরণের আর্থিক লেনদেন পরিচালিত হয়না। অতএব, অন্যকোন মাধ্যমে 'পুলিশবন্ধু ডট কম' বিষয়ক আর্থিক লেনদেন না করার জন্য সবাইকে সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা হচ্ছে। সতর্কতায়:- 'পুলিশবন্ধু ডট কম' কর্তৃপক্ষ।

পুলিশবন্ধু মতামত: বাঁচা-মরার প্রশ্ন বায়ুদূষণ

  • প্রকাশকাল : বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

পুলিশবন্ধু মতামত ডেক্স, অধ্যাপক ডা: শাহ মো: বুলবুল ইসলাম:
মাত্র ক’দিন আগে একটি জাতীয় দৈনিকে ক্যাপসের গবেষণায় শিউরে ওঠার মতো খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটিতে বলা হয়, রাজধানী ঢাকার নাগরিকরা গত ৬ বছরের মধ্যে মাত্র ৩৮ দিন ভালো বায়ু গ্রহণ করেছেন, যা গত ৬ বছরের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ। বায়ুদূষণ শুধু ঢাকায় তা কিন্তু নয়! দেশের ৫৪টি জেলা বায়ুদূষণের শিকার। নির্মল বায়ুর চেয়ে দূষিত বায়ুর পরিমাণ দ্বিগুণ। বায়ুদূষণের কারণগুলো হচ্ছে – অনিয়ন্ত্রিত ও অস্বাস্থ্যকর ইটভাটা, যানবাহনের নির্গত কালো ধোঁয়া, রাস্তার যততত্র খোঁড়াখুঁড়ি, শিল্পকারখানার নির্গত ধোঁয়া এবং বর্জ্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ভাষ্যমতে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ বায়ুদূষণে মারা যায়। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ২০২০ সালে ঢাকা শহরে ছিল ১০৬। অথচ স্বাভাবিক নিয়মে যা ৬৪ হওয়া কথা। বর্তমানে তা আরো বেড়েছে। শিকাগো ইউনিভার্সিটির এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ঢাকার বাইরে ৫ বছর ৪ মাস এবং রাজধানী ঢাকায় ৭ বছর ৭ মাস কমেছে। তাদের প্রকাশিত এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাজধানী ঢাকায় বায়ুদূষণ না থাকলে বসবাসকারী নাগরিকরা আরো ৭ বছর ৭ মাস বেশি বাঁচতে পারতেন। ঢাকা শহরে বায়ুদূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে উচ্চ আদালত এ ব্যাপারে কয়েকবার দায়িত্বশীল কৃর্তপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং রুল জারি করেছেন। তবু বায়ুদূষণ রোধ হচ্ছে না।

বায়ুদূষণের কারণে অক্সিজেনের বদলে আমরা কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, সিসা এবং পারদের মতো বিষাক্ত দ্রব্যাদি নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণ করছি। এটা শুধু আমাদের শরীরের ভেতরে যায় না, এটা আমাদের রক্ত প্রবাহের সঙ্গে মিশে যায়। ফলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, অকাল গর্ভপাতের পরিমাণ, অপুষ্টিজনিত শিশুর জন্ম, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম, শিশুর মানসিক বিকাশের দুর্বলতা, বুদ্ধি প্রতিবন্দী শিশুর সংখ্যা ও বন্ধ্যত্বের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষের স্বাভাবিক মেজাজের তারতম্য ঘটছে। এসবই দূষিত বাতাসের কারসাজি। এ ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হলে হয়তো ৩০/৪০ বছর পর বিশাল উন্নয়ন হবে; কিন্তু এ উন্নয়ন উপভোগ করার মতো সুস্থ জাতির অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।

এখানেই শেষ নয়! দূষিত বায়ুর কারণে গাছপালার ফলন ও পশুপাখিদের আনাগোনা কমে গেছে। গাছে ফল এলেও অকালেই ঝরে পড়ছে। গাছপালার ওপর নির্ভরশীল পশুপাখির জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রাণীর যেমন খাদ্যের প্রয়োজন হয় তেমনি গাছপালারও খাদ্যের প্রয়োজন রয়েছে। দূষিত বায়ুর কারণে গাছগুলো প্রয়োজনমাফিক সালোকসংশ্লেষণ (সবুজ উদ্ভিদের খাদ্য তৈরির রাসায়নিক বিক্রিয়া) প্রক্রিয়ায় খাবার তৈরি করতে পারছে না। এটা গাছপালার ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। জরুরি ভিত্তিতে এ ব্যাপারে কার্যকর নীতিমালা গ্রহণ করা প্রয়োজন। অবৈধ ইটভাটার ছড়াছড়ি বন্ধ ও স্বাস্থ্যকর ইটভাটা তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তায় যেসব মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল করে সেগুলো যেকোনো মূল্যে রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। সরিয়ে ফেলতে হবে কালো ধোঁয়া নির্গতকারী বাস, মিনিবাস ও লেগুনা। মাত্রার চেয়ে বেশি কালো ধোঁয়া এবং বায়ুদূষণ রোধে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কিছু দেখা যায়নি। ট্রাফিক সপ্তাহ পালন উপলক্ষে অবশ্য মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়িগুলো রাস্তায় দেখা যায় না। অথচ কিছু দিন পরে এগুলো আবার রাস্তায় দেখা যায়। গাড়িতে বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ঢেকে বহন করার কথা থাকলেও প্রায়ই দেখা যায় খোলা অবস্থায় পরিবহন করা হচ্ছে। বিভিন্ন নির্মাণকাজের সামগ্রী রাস্তার পাশে খোলা অবস্থায় রেখে দেয়া হয় এবং শুকনা মৌসুমে রাস্তায় ধুলা উড়ে বায়ুদূষণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়। এটা বন্ধ করা দরকার। রাস্তায় পর্যাপ্ত পানি দেয়ার ব্যবস্থা করা দরকার।

দেশের মহাসড়কগুলোর দু’পাশ অবারিত। এক সময় এগুলো গাছপালা দ্বারা সুশোভিত ছিল। এখন আর তেমনটা দেখা যায় না। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তার দু’পাশে দ্রুত বর্ধনশীল দেশীয় গাছ রোপণ করা প্রয়োজন। বৃক্ষরোপণ বলতে বিদেশী গাছ নয়, দেশীয় গাছ। যেটাতে ফল ও ফুল হবে। পাখপাখালি বসবে। পাহাড়ের গাছ কাটা বন্ধ ও নিবিড় বনায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। সব কিছুই জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। না হলে আজকে যে ব্যাপারটাকে আমরা এড়িয়ে যাচ্ছি অদূরভবিষ্যতে তা আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদফতর মন্ত্রণালয়ের সোচ্চার ভ‚মিকাই পারে বায়ুদূষণের ভয়াবহতা থেকে দেশের নাগরিকদের বাঁচাতে। সাথে সাথে প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা।

লেখক : অধ্যাপক ও চক্ষুরোগ রিশেষজ্ঞ
Email:- shah.b.islam@gmail.com

অনুগ্রহ করে এই সংবাদটি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও খবর

© একটি 'নাগরিক সিন্ডিকেট' প্রচেষ্টা এবং মোঃ জসীমউদদীন (রুমান) কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Site Customized By NewsTech.Com